ট্রাম্পকে কুরআনের বাণী শোনালেন ইমাম

https://www.youtube.com/channel/UCxTXJuuY4hasFcEWv4j13iQ
রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি আন্তঃধর্মীয় ধর্মীয় প্রার্থনা অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে দু’টি আয়াত পাঠ করে নতুন প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাসনের জন্য স্পষ্ট বার্তা দিলেন ওয়াশিংটনের ইমাম মাজিদ।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল পেন্সের পরিবারসহ ট্রাম্প-অনুসারীদের উদ্দেশে তিনি আয়াত দু’টি প্রথমে আরবিতে পাঠ করেন এবং তারপর তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে শোনান। প্রথম আয়াতটি তিনি সূরা হুজুরাত থেকে পাঠ করেন। যেটিতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি (আদম ও হাওয়া) এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন গোত্র ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছি; যাতে তোমরা পরস্পরের সাথে পরিচিতি হতে পারো। প্রকৃতপক্ষে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সবচেয়ে মুত্তাকি, সে-ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবগত।’
দ্বিতীয় আয়াতটি তিনি সূরা লুকমান থেকে পাঠ করেন। এতে বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শনের অন্যতম হচ্ছে আসমান ও জমিনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও গায়ের রঙের তারতম্য। নিঃসন্দেহে এসব নিদর্শন তাদের জন্য, যারা আমার সম্পর্কে জানে।’ শনিবার ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালে বিভিন্ন ধর্মের মোট ২৬ জন ধর্মীয় নেতা ট্রাম্পের জন্য প্রার্থনা করেন। ইমাম মোহাম্মাদ মাজিদ তাদেরই একজন। ইমামের এই তেলাওয়াতের সময়ে ট্রাম্প মনোযোগ সহকারে তা শোনেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই ধরে নিয়েছিল মোহাম্মদ মাজিদ হয়তো নামাজ সম্পর্কে কিছু একটা বলবেন। কিন্তু এর পরিবর্তে কুরআনের দু’টি আয়াত পাঠের মাধ্যমে মাজিদ চেয়েছেন ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের শিক্ষা দিতে আর তা হচ্ছে, জাতিগত ও ধর্মীয় বিবাদ ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টের উদ্বোধনী ঐতিহ্য হিসেবে এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সময় থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। ওই অনুষ্ঠানে বলা হয়, মাজিদ মুসলিমদের প্রার্থনা সম্পর্কে কিছু পাঠ করবেন। নেতৃস্থানীয় অনেকেরই বিশ্বাস ছিল, তিনি একটানা সুরে তা পাঠ করে যাবেন। এর পরিবর্তে মাজিদ কুরআন থেকে দু’টি আয়াত বেছে নেন, যে আয়াত জাতিগত ও ধর্মীয় বিবাদের বিষয়ে। যখন আমেরিকার অনেকে মুসলিমদের নিয়ে বিভিন্ন সন্দেহ পোষণ করছেন, তখন তিনি এ দু’টি আয়াত পাঠ করাকেই যুক্তিযুক্ত মনে করেছেন।
‘অল ডিউলেস এরিয়া মুসলিম সোসাইটি’র বোর্ড চেয়ারম্যান ড. রিজওয়ান জাকা বলেন, ‘নির্বাচনের পরও যখন মুসলমানদের সম্পর্কে অনেক কথা বলা হয়েছে এবং মুসলমানদের আনুগত্য সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তখন এই আয়াতগুলোর মূল বার্তা হচ্ছে, আমাদেরকে অবশ্যই একসাথে মিলেমিশে বাস করতে হবে এবং বৈচিত্র্যকে সম্মান করতে হবে এবং মহান আল্লাহ আমাদের এ পথেই সৃষ্টি করেছেন।’

No comments:

Theme images by Maliketh. Powered by Blogger.