Thursday, April 17 2025

শবে মিরাজের প্রকৃত শিক্ষাঃ



+++++++++++++++++++++++++++
#রাসূল (সাঃ) মিরাজ থেকে ফিরে আসার পর সূরা বনী ইসরাইলের মাধ্যমে ১৪ টি দফা মানুষের সামনে পেশ করেন-
১.আল্লাহ্‌র সাথে কাউকে শরীক করো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অসহায় হয়ে পড়বে। আর তোমরা কেবলমাত্র আল্লাহ্‌রই বন্দেগী কর (সুরা বনী ইসরাইল-২২)
২. পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার করো। তাদের একজন বা উভয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় যদি তোমাদের সামনে উপনীত হয় তাহলে তাদের সাথে উফ্ শব্দটি পর্যন্ত করো না। তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিও না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। আর তাদের সামনে বিনয়ী থেকো আর দোয়া করতে থাক-
”হে আমার প্রতিপালক, তাঁদেরকে তেমনিভাবে লালন পালন করো যেমনি তারা শৈশবে আমাদেরকে লালন পালন করেছেন”
(সুরা বনী ইসরাইল-২৩ -২৪)।
৩. তোমাদের কৃত কর্মের জন্য আল্লাহ্‌র নিকট তওবা কর, তাহলে আল্লাহ্‌ তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিবেন।
নিশ্চই আল্লাহ্‌ তোমাদের মনের খবর জানেন
(সুরা বনী ইসরাইল-২৫)।
৪. আত্মীয় স্বজনকে তাদের অধিকার দাও আর মুসাফিরদের হক আদায় কর (সুরা বনী ইসরাইল-২৬)।
৫. অপব্যয় করো না, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই, আর শয়তান স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ
(সুরা বনী ইসরাইল-২৭)।
৬. হকদারদের হক আদায়ে তুমি যদি অপারগ (অসমর্থ) হও তাহলে তাদের সাথে অত্যন্ত নম্রভাবে কথা বল
(সুরা বনী ইসরাইল-২৮)।
৭. ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেহিসাবী হয়ো না, আবার কৃপনতাও প্রদর্শন করো না।
আল্লাহ্‌ যাকে চান রিযিক বাড়িয়ে দেন, যাকে চান কমিয়ে দেন (সুরা বনী ইসরাইলঃ ২৯-৩০)।
৮. দারিদ্রের ভয়ে সন্তান হত্যা করো না।
নিশ্চয়ই এটি মহাপাপ (সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩১)।
৯. যেনা, ব্যাভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ
(সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩২)।
১০. কোন জীবনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করো না।
কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি এই অধিকার দিয়েছি (চাইলে রক্তের বিনিময় চাইতে পারে), তবে প্রতিশোধের ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে (সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩৩)।
১১. এতিমের সম্পদের ধারে কাছেও যেও না। সম্পদের ব্যাপারে তার বয়োপ্রাপ্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করো আর প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সচেতন থাক।
নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে (সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩৪)।
১২. ওজনে কখনো কম দিও না।
দাঁড়িপাল্লা সোজা করে ধরবে। এটিই উত্তম পন্থা
(সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩৫)।
১৩. যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই সেগুলোর পেছনে লেগো না। নিশ্চয়ই চোখ, কান, অন্তর সবকিছুই জিজ্ঞাসিত হবে
(সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩৬)।
১৪. যমীনে দম্ভসহকারে চলো না।
এগুলো সবই মন্দ ও ঘৃণিত কাজ (সুরা বনী ইসরাইলঃ ৩৭-৩৮)।
..........................................................................................
এই ১৪ দফাই শবে মিরাজের প্রকৃত শিক্ষা। শুধু ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, বরং যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা রাসূল (সাঃ) মদিনায় গিয়ে কায়েম করেছিলেন, এগুলো তার বুনিয়াদী মূলনীতি। পরবর্তীকালে এই দফাগুলো ইসলামী রাষ্ট্রের আইনে পরিনত হয় এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিধি ব্যবস্থা রাসূল (সাঃ) প্রনয়ন করেন।
ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠার পর মানুষের জীবনধারা সুন্দর ও শান্তিময় হয়ে ওঠে এবং পবিত্র জীবনধারার এক সভ্যতার বিস্তৃতি লাভ করে।Cltd

Leave a Comment

Theme images by Maliketh. Powered by Blogger.